আবদুর রাজ্জাক,কক্সবাজার :
আমাদের দেশের নতুন প্রজন্মের তরুন তরুণী  উল্লেখযোগ্য একটি অংশ আজ ইয়াবা নামক সর্বনাশা মরণনেশার শিকার।যে তরুন তরুণীর ঐতিহ্য রয়েছে সংগ্রামের,অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের, যুদ্ধজয়ের আজ তারা নিঃস্ব হচ্ছে মরণ নেশার করাল ছোবলে।মাদক নেশার যন্ত্রনায় ধুকছে শত-সহস্র প্রাণ। ঘরে ঘরে সৃষ্টি হচ্ছে নানা সমস্যা,অপরাধ ও উদ্বেগ। ভাবিত হচ্ছে সমাজ।মাদকের সর্বনাশা থাবার নিচে আজকের বিশ্ব অসহায়ভাবে আত্নসমর্পন করতে বসেছে।মাদকের ছোবলে সমাজদেহ ক্ষত বিক্ষত হয়ে পড়েছে।তরুন সমাজ উদভ্রান্ত, লক্ষহীন,সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে, নৈতিকতার অপমৃত্যু অত্যাসন্ন হয়ে পড়েছে।এই সময় বিখ্যাত সমাজবিঞ্জানীর কন্ঠে প্রতিধ্বনিত হয়েছে মাদক নিয়ে তীব্র উদ্বেগাকুলতা(addiction,intoxication,perversion and contamination must be resisted to minimize social stability,youth depression and dejection.)অর্থ – সাধারনত যেসব বস্তুতে মাদকতা আছে সেগুলোই মাদকদ্রব্য।অর্থাৎ যেসব দ্রব্য মানুষের স্বাভাবিক বুদ্ধি ও চিত্তের বৈকল্য এবং স্নায়ুবিকক্ষেত্রে অস্বাভাবিকতা এনে দেয়,তাকে মাদকদ্রব্য বলে চিহ্নিত করা হয়।মহানবী (সঃ) বলেছেন,যাবতীয় নেশাজাতীয় দ্রব্যই মাদক আর সকল মাদকই হারাম।মাদকাসক্তির ফলে ব্যক্তিগত,পারিবারিক ও সামাজিক জীবণে অধঃপতন হয়।মাদকদ্রব্যের ভয়াবাহ বিস্তার গোটা বিশ্বের জন্য আজ উদ্বেগজনক ।আজ যুক্তরাষ্ট্রের সমাজজীবনে এটা এক নম্বর সমস্যা।প্রায় ৪ কোটি আমেরিকান নর নারী কোকেন সেবন করে,কমপক্ষে ২ কোটি মারিজোয়ানা সেবন করে ২লক্ষ হেরোইন সেবনকারী।কিন্তু সমস্যা শুধু ইউরোপ আমিরেকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়,এ অশুভ ছায়া এশিয়া আফ্রিকার দেশে দেশে ইতিমধ্যেই আশঙ্খাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।আমার মাঝে মাঝে হাসি পায় এ কথা ভেবে যে উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অর্থনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে না থাকলেও মাদকদ্রব্যের ব্যাবহারে বাংলাদেশ অনেকটা এগিয়ে।আমাদের তরুন/তরুণীটরা এখন ভয়াবাহ মাদকাসক্তির শিকার।বেসরকারী হিসাব মতে বাংলাদেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা এক কোটির বেশি। আমাদের দেশের অধিকাংশ যুবক যুবতীরা, তরুন তরুনীরা মাদকের দিকে বেশি ঝুকে পড়ছে।বর্তমানে কিছু স্কুলের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় সেখানকার কিছু তরুন ধূমপান করছে।শিক্ষকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা ধূমপানসহ বিভিন্নরকম মাদকদ্রব্য সেবন করছে।মাদকাসক্তির মতো সর্বনাশা ছোবল দেশের তরুন সমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আজকের ও আগামীর দিনের সুস্থ,সুন্দর ও সুখকর সমাজ পেতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই মাদকের প্রতিরোধ করতে হবে।আর এজন্য প্রয়োজন ব্যক্তিগত উদ্যোগ ,সামাজিক প্রতিরোধ এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ। আর মনে রাখতে, মাদকাসক্তির করাল গ্রাস থেকে জাতিকে রক্ষা করার দায়িত্ব দল মত নির্বিশেষে সবার।